img

সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে বেড়েছে সব ধরনের মুরগির দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি মুরগি ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় গতকাল শেষ দিনে আকারভেদে কেজিতে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে ইলিশ বিক্রি হয়েছে। আর আগের বাড়তি দামেই চাল, ডিম, মাছ ও সবজি বিক্রি হচ্ছে।তবে কমেছে ভোজ্য তেলের দাম। বাজারে নতুন দামের সয়াবিন তেলের সরবরাহ বেড়েছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি, গত সপ্তাহে যা ছিল ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি। আগের সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকা। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজি। আগের সপ্তাহে ছিল ৪৭০ থেকে ৪৮০ টাকা কেজি। 

গতকাল মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে ইলিশ ধরায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, যার প্রভাবে শেষ দিন গতকাল বাজারে ইলিশের দাম ছিল বেশ চড়া। এক কেজি ওজনের ইলিশ এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ছিল এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৭০০ টাকায়। গত সপ্তাহে এই ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা কেজি। 

মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মেসার্স মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে মুরগির সরবরাহ কম। এ কারণে সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে। আজ (গতকাল) ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৮০ টাকা। সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫০০ টাকা। ’

নিত্যপণ্যের হালহকিকত 

সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটারে কমেছে ১৪ টাকা। বর্তমানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৮ টাকা, যা আগে ছিল ১৯২ টাকা। গত সোমবার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন তেলের দাম কমিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়, যা কার্যকর হয় গত মঙ্গলবার থেকে। গতকাল বাজারে নতুন দামের তেল বিক্রি হতে দেখা গেছে। 

এ ছাড়া প্রতি কেজি খোলা আটা ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজি ওজনের প্যাকেট আটা ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাল আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। মোটা ব্রি ২৮ চাল কেজি ৬০ টাকা, চিকন চাল কেজি ৭৫ টাকা, নাজিরশাইল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। 

চিকন মসুর ডাল কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, আমদানি করা আদা কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি, আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, দেশি রসুন ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। পেঁয়াজ ৪৫ টাকা কেজি, আলু ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ডিম আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজন ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। 

জোয়ারসাহারা বাজারের সিয়াম স্টোরের ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দাম কমানোর ঘোষণার পর থেকে ক্রেতারা নতুন দামের তেল খুঁজছিলেন। দুই দিন কম্পানিগুলো না দেওয়ায় ক্রেতাদের দিতে পারিনি। আজ (গতকাল) কম্পানিগুলো নতুন দামের সয়াবিন তেলের বোতল সরবরাহ করেছে। ’ তিনি বলেন, ‘তেল ছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে অন্য নিত্যপণ্যের দামে তেমন পরিবর্তন হয়নি। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। ’

মাছবাজারের চিত্র

সপ্তাহের ব্যবধানে আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ। মাঝারি আকারের প্রতি কেজি তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। মাঝারি আকারের পাঙ্গাশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। এক কেজি ওজনের রুই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। দেড়-দুই কেজি ওজনের রুই ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, বড় রুই কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। বড় কাতল ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের কার্প মাছ কেজি ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, ছোট আকারের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজিতে। 

সবজিতে স্বস্তি

রাজধানীর বাজারগুলোয় সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু সবজির দাম কমেছে। আবার কিছু সবজির দাম বেড়েছে। তবে ক্রেতারা সবজিবাজার নিয়ে কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। লম্বা বেগুন কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গোল বেগুন ১০০ টাকা কেজি, দেশি শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটোল, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ছোট আকারের ফুলকপি ও বাঁধাকপি পিস ৫০ টাকা, শিম ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর